সীতাকুণ্ডে ব্যবসায়ীর টাকা লুট: ২ পুলিশ সদস্য রিমান্ডে।

সুমনসেন চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি-

সীতাকুণ্ডে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে টাকা লুটের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় দুই পুলিশ সদস্যকে রিমান্ডে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার (২৮ ডিসেম্বর) দুপুরে পঞ্চম জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

এর আগে মামলার তদন্তকারী সংস্থা চট্টগ্রাম জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ঘটনার বিষয়ে আসামিদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতের কাছে পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। দুই পুলিশ সদস্য হলেন, এসআই সাইফুল আলম ও কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম। তারা দুজনই সীতাকুণ্ড থানায় কর্মরত ছিলেন।
রিমান্ড মঞ্জুরের বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট পরিদর্শক শুভ্রত ব্যানার্জী বলেন, সীতাকুণ্ড থানার একটি মামলায় পুলিশ সদস্যের রিমান্ড চেয়ে একটি আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
গত ২৪ ডিসেম্বর ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী সীতাকুণ্ড থানায় হাজির হয়ে দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। মামলাটি আমলে নিয়ে পরদিন ২৫ ডিসেম্বর দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ ডিসেম্বর পিকআপ কেনার জন্য গাজীপুর থেকে সীতাকুণ্ডে আসেন আবু জাফর। দরদাম না মেলায় পুনরায় বাড়ি ফেরার উদ্দেশে পৌরসভার বাসস্ট্যান্ডে টিকিট কেটে শ্যামলী বাস কাউন্টারে অপেক্ষা করতে থাকেন তিনি। সেখানে দুইজন লোক তার পাশে এসে বসেন। তারা আবু জাফর কোন জায়গা থেকে এসেছেন তা জানতে চান। একপর্যায়ে তাদের সঙ্গে যোগ দেন এসআই সাইফুল আলম ও সীতাকুণ্ড থানার ওসি ফিরোজ হোসেন মোল্লার বডিগার্ড কনস্টেবল সাইফুল ইসলাম। তারা দুজন নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয়ে আবু জাফরকে ইয়াবা ব্যবসায়ী উল্লেখ করে তার পেটে ইয়াবা আছে বলে ভয়ভীতি দেখান।
পরে আবু জাফরকে একটি গাড়িতে তুলে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে পেটে ইয়াবা আছে বলে এক্স-রে করান। তার পেটে ইয়াবা না পেয়ে তাকে গাড়িতে করে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরানো হয়। একপর্যায়ে তার কাছে থাকা ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা কেড়ে নিয়ে তাকে ক্রসফায়ারের ভয়ভীতি দেখিয়ে ঢাকার একটি গাড়িতে তুলে দেওয়া হয়।
কিন্তু ব্যবসায়ী আবু জাফর ঢাকায় না গিয়ে চট্টগ্রাম পুলিশ সুপারকে বিষয়টি অবহিত করেন। চট্টগ্রাম পুলিশ সুপারও বিষয়টি তদন্তের জন্য সীতাকুণ্ড সার্কেলের অ্যাডিশনাল এসপি মো. আশরাফুল করিমকে নির্দেশ দেন। আশরাফুল করিম ঘটনার তদন্তে সত্যতা পেয়ে এসপিকে অবগত করলে তিনি ওই দুই পুলিশ সদস্যকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন।